বিলিরুবিন টেস্ট
রক্তের নমুনায় বিলিরুবিনের মাত্রা পরিমাপ করা হয় বিলিরুবিন টেস্ট দিয়ে। বিলিরুবিন থাকে পিত্তরসে। এর রং বাদামি হলুদ। রক্তের লোহিত কণিকাকে লিভার ভাঙ্গলে বিলিরুবিন তৈরি হয়। স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে এই বিলিরুবিন পায়খানার সঙ্গে বের হয়ে যায়। এ কারণে স্বাভাবিক পায়খানার রং হলুদ হয়। রক্তে এই বিলিরুবিন দুইভাবে থাকতে পারে। ইনডাইরেক্ট বা আনকনজুগেটেড বিলিরুবিন ও ডাইরেক্ট বা কনজুগেটেড বিলিরুবিন হিসেবে। বিলিরুবিনের মাত্রা রক্তে বেড়ে গেলে, ত্বক ও চোখ হলদেটে হয়। এটি জন্ডিস নামে পরিচিত। জন্ডিস হতে পারে বহু কারণে। যেমন_লিভারের অসুখ, রক্তের অসুখ, পিত্তনালির অবস্ট্রাকশন। রক্তে বিলিরুবিনের অতিরিক্ত উপস্থিতি ব্রেন ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, শ্রবণশক্তি খর্ব করতে পারে, চোখের নড়াচড়া কমিয়ে দিতে পারে, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। বিশেষ করে সদ্যোজাত শিশুর ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়। বিলিরুবিন টেস্টের মাধ্যমে জানা যায়, লিভার ঠিকমতো কাজ করছে কি না, লিভারে সিরোসিস বা হেপাটাইটিসের মতো কোনো রোগের লক্ষণ আছে কি না কিংবা কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে লিভার নষ্ট হচ্ছে কি না, পিত্তথলিতে পাথর বা অন্যকোনো কারণে পিত্ত রসের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কি না ইত্যাদি। এমনকি রক্তের অসুখ যেমন, লোহিত কণিকা অতিরিক্ত নষ্ট হচ্ছে কি না, অন্য কোনো অসুখে রক্ত রোগ হচ্ছে কি না, তাও প্রাথমিকভাবে এ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়। নবজাত শিশুর জন্ডিসের চিকিৎসা প্রয়োজন কি না তাও এ টেস্ট দিয়েই চিকিৎসকরা নির্ধারণ করেন। প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের বিলিরুবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ০.৩ থেকে ১ মি.গ্রা./ডেসিলিটার।