সিরাম বিলিরুবিন টেস্ট
বিলিরুবিন একটি হলুদ রঙের পিগমেন্ট যা লিভারে তৈরি হয়। হিমোগ্লোবিনের হিম ( হিমোগ্লোবিনের লৌহযুক্ত প্রস্থেটিক গ্রুপ ) ভেঙ্গে হলুদ পিত্ত রঞ্জক বর্জপদার্থ বিলিরুবিন তৈরি হয়। আমাদের লিভার বিলিরুবিনকে রক্ত থেকে অপসারন করে। এটি বিলিরুবিনকে পিত্তে ঘনীভূত করে এবং পরবর্তীতে তা গলব্লাডারে জমা হয়। আমাদের শরীর বিলিরুবিন দুই ভাবে বের করে দেয়। অধিকাংশ বিলিরুবিন মল এর মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় , ফলে আমাদের মল হলুদ রঙ ধারন করে। কিছুটা বিলিরুবিন প্রস্রাব এর মাধ্যমে বেরিয়ে যায়, ফলে প্রস্রাব হলুদ রঙের হয়। রক্তে বিলিরুবিন ইনডাইরেক্ট বা আনকনজুগেটেড বিলিরুবিন ও ডাইরেক্ট বা কনজুগেটেড বিলিরুবিন এই দুইভাবে থাকতে পারে। শরীরে বিলিরুবিন বেড়ে যাবার পিছনে কিছু কারন দায়ী, যেমনঃ - পিত্তনালীর অবস্ট্রাকশন - লিভার ডিজিস - গলব্লাডার বা প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার - গিলভার্ট সিনড্রোম - বিভিন্ন ঔষধ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া - অন্যান্য কারন রক্তে বিলিরুবিন বেড়ে গেলেঃ - ত্বক ও চোখ হলদেটে হয়ে যায় ( যা জন্ডিস নামে পরিচিত ) - শ্রবণশক্তির ক্ষতি হতে পারে - ব্রেনের ক্ষতি হতে পারে - চোখ নড়াচড়া কমিয়ে দিতে পারে - অবশেষে মৃত্যু হতে পারে বিলিরুবিন টেস্টের মাধ্যমেঃ - লিভার ঠিকমতো কাজ করছে কিনা। - কোন ঔষধের কারনে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না। - লিভার সিরোসিস এর মত জটিল রোগ আছে কি না। - পিত্তথলিতে পাথর আছে কিনা - পিত্তরসের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কিনা - লোহিত রক্ত কনিকা অতিরিক্ত নষ্ট হচ্ছে কি না - এছাড়া আরও অনেক রোগের ব্যাপারে প্রাথমিক ধারনা পাওয়া যায় রোগীর প্রাথমিক প্রস্তুতি ও জিজ্ঞাসাঃ - কোন ধরনের এন্টিবায়োটিক ঔষধ নিচ্ছেন কিনা তা ডাক্তারকে জানাবেন। - ক্যান্সার রোগের সাথে সম্পৃক্ত কোন ঔষধ বা চিকিৎসা নেয়া হচ্ছে কিনা তা ডাক্তারকে জানাতে হবে। - যে কোন ধরনের জন্ম নিরোধক ব্যবস্থা নিলে তা ডাক্তারকে জানাবেন। - এ পরীক্ষায় রোগীর জন্য বিশেষ কোন প্রাথমিক প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই এই টেস্টের ক্ষেত্রে নিন্মলিখিত বিষয়গুলো জেনে রাখা ভালোঃ - স্যাম্পল দেবার সময় একই সিরিঞ্জ একাধির ব্যক্তির ব্যবহার হতে বিরত থাকতে হবে - সঠিক রেজাল্ট পাওয়ার জন্য বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত স্যাম্পল নিতে হবে - নিশ্চিত হবার জন্য একদম ছোট বাচ্চাদের এই টেস্ট কয়েকবার করে নেয়া ভাল - “Hemolyzed Sample – লোহিত রক্ত কনিকার ভাঙ্গন” থেকে যদি বিলিরুবিন টেস্ট করা হয় তবে রেজাল্ট ভুল আসতে পারে। - একই দিনে যদি একাধিক ল্যাবে স্যাম্পল টেস্ট করা হয় তবে কিছুটা ভিন্ন রেজাল্ট আসতে পারে, তবে এক (১) পয়েন্ট এর বেশী ব্যবধান না হলে তা সঠিক ধরে নেয়া যাবে। - বিলিরুবিন এর রিপোর্ট এর উপর ভিত্তি করে ডাক্তার প্রয়োজনীয় অন্যান্য টেস্ট দিতে পারেন। - নিজে নিজে সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা নেয়া থেকে বিরত থাকুন।